Header Ads

Header ADS

নুসরাতের গায়ে যারা আগুন দিয়েছে তারা সবাই বোরকা পরা ছিল!

ফেনীর সোনাগাজীতে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া চার দুর্বৃত্তই ছিল বোরকা পরা। ফলে রাফি চারজনেই কাউকেই চিনতে পারেনি। তবে চারজনের মধ্যে একজন নারীকণ্ঠে রাফির সঙ্গে কথা বলেছে। বাকি তিনজন কোনো কথা বলেনি।
নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সামনে  এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ঘটনার পর তাঁর বোন তাদের এ কথা জানিয়েছেন।
নুসরাত বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকেরা জানিয়েছে।
ফেনীর সোনাগাজীতে ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রের ভেতরে রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যাচেষ্টা হয়। ঘটনার পর রাফিকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
রাফির ভাই বলেন, ঘটনার পর রাফি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছু কথা বলে। বোনের বরাত দিয়ে নোমান বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার পর একজন পরীক্ষার্থী রাফিকে বলে, তার (রাফির) এক বান্ধবীকে কারা যেন ছাদে মারধর করছে। এটা শুনে রাফি ছাদে যায়। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে।
নোমান বলেন, বোনের কথা শুনে মনে হয়েছে, বোরকা পরা চারজন মিলে নুসরাত জাহান রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর যে রাফিকে ছাদে যেতে প্রলুব্ধ করেছে সেও এদের সঙ্গে যুক্ত। তবে এদের পরিচয় জানা যায়নি। এরা নারীর বেশ ধরে পুরুষও হতে পারে বলে ধারণা করছেন নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
নোমানের দাবি, ২৭ মার্চের ঘটনার জের ধরে সোনাগাজী ইসলামিয়া অধ্যক্ষ সিরাজুদ্দৌলা তাঁর লোকজন দিয়ে আজকের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ওদিন সিরাজুদ্দৌলা মাদ্রাসার নিজ কক্ষে রাফিকে অনৈতিক দেন। রাজি হলে আলিম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগে দেওয়া হবে অধ্যক্ষ উল্লেখ করেন। এ ঘটনায় মামলা হওয়ায় অধ্যক্ষ এখন জেলে আছেন।
নোমান বলেন, চারজন যারা রাফির শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন নারীকণ্ঠে কথা বলেছেন। সে মেয়ে বলে ধারণা করছি। বাকিরা কথা বলেনি। তৃতীয় তলার ছাদে রাফি যাওয়ার পর নারীকণ্ঠে একজন ২৭ মার্চের ঘটনার জেরে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। রাজি না হওয়ার কারণে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় চারজন।
২০১৬ সালে দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার সময়ও এলাকার দুর্বৃত্তরা রাফির ওপর হামলা চালায়। সেবার মেয়েটির চোখে চুন মারা হয়। এতে রাফির ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে নোমান জানান। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে আজকের ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা সেটি তিনি বুঝতে পারছেন না।
রাফির আত্মীয়রা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জানান, রাফি যে মাদ্রাসায় পড়েন, সেখানে অধ্যক্ষ সিরাজুদ্দৌলা নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন। এর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা পরিচালন কমিটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন রাফি । বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল সাংবাদিকদের বলেন, রাফির শরীরের মুখমণ্ডলের ক্ষতি হয়নি। তবে তাঁর শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। শ্বাসনালি পুড়ে না গেলেও রাফির অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান তিনি।
এই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঘটনাটি পুলিশ খুব গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা তদন্ত করে বের করা হবে।
ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

No comments

Theme images by TommyIX. Powered by Blogger.